রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক কোর্সে ভর্তির জন্য চারটি বিভাগ কোনো ছাত্রছাত্রী পায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি বিভাগের মধ্যে আসন পূর্ণ হয়েছে মাত্র তিনটিতে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চতুর্থবারে মতো টাঙানো অপেক্ষমাণ তালিকার বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৭০টি আসনের মধ্যে ৫১৩টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। বাকি রয়েছে ৩৫৭টি আসন। অথচ ক্লাস শুরু হওয়ার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ১৪ জানুয়ারি।
রুয়েট সূত্রে জানা গেছে, এবার ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২৬ অক্টোবর। পরীক্ষা দিয়েছিলেন প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে পাস করেছেন ২ হাজার ৫০০ জন। এ পর্যন্ত ১৪টি বিভাগের মধ্যে মাত্র তিনটি বিভাগের সব আসনে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়েছেন। এই বিভাগগুলো হচ্ছে গ্লাস অ্যান্ড সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং (জিসিই), আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং (ইউআরপি) ও ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (এমএসই) বিভাগ।
যে চারটি বিভাগে ভর্তির জন্য উত্তীর্ণ একজন শিক্ষার্থীও পাওয়া যায়নি, সেগুলো হচ্ছে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই), মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (এমই), কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) ও ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগ। এই বিভাগগুলোর প্রথম তিনটির প্রতিটিতে আসন রয়েছে ১২০টি করে এবং শেষটিতে রয়েছে ৬০টি।
বাকি সাতটি বিভাগের মধ্যে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (সিই) বিভাগের ১২০টির মধ্যে ৬৯টি আসন ফাঁকা রয়েছে। ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগে ৬০টি আসনের মধ্যে ৫৮টি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইপিই) বিভাগের ৬০টির মধ্যে ৪১টি, ম্যাকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (এমটিই) বিভাগের ৩০টির মধ্যে ১৭টি, বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজমেন্ট (বিইসিএম) বিভাগে ৩০টির মধ্যে ২৯টি, আর্কিটেকচার বিভাগের ৩০টির মধ্যে ২৭টি ও কেমিক্যাল অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএফপিই) বিভাগের ৩০টি আসনের মধ্যে ২৬টি ফাঁকা রয়েছে।
জানতে চাইলে রুয়েটের উপাচার্য রফিকুল আলম বেগ প্রথম আলোকে বলেন, রুয়েটের ৫২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এখন আসনগুলো কি ফাঁকাই থাকবে, নাকি যাঁরা ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি, তাঁদের ভেতর থেকে টানা হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের। সপ্তাহ খানেক পরে এই কাউন্সিলের বৈঠক রয়েছে। সেখানে এ বিষয়টিও আলোচ্যসূচিতে থাকবে। যা সিদ্ধান্ত হয়, সেই অনুযায়ী চলতে হবে। কেন এমন হলো, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তাঁরা ভর্তির সময় সবাই আসেননি। যাঁরা ভালো করেন, সবখানেই ভালো করেন। তাঁরা হয়তো অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে গেছেন। তিনি বলেন, পরীক্ষাগুলো প্রায় একই সময়ে হয়েছে। এটাও একটা কারণ। তবে পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা নিতে গেলে হয়তো সারা বছর ধরে ভর্তি পরীক্ষাই নিতে হবে। পড়াশোনার মান কমে যাওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে কি না জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, মানের ব্যাপারটা হয়তো ঠিক আছে। তবে শিক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ পাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু পদ্ধতিগত কারণে কিছু ঘাটতি নিয়েই পাচ্ছে।