খুলনা বিভাগে শ্রেষ্ঠ ইউএনও সাহেলা আক্তার

0
154

এসএম জামাল : উদ্ভাবন চর্চায় খুলনা বিভাগে শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নির্বাচিত হয়েছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহেলা আক্তার। শুক্রবার খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরে আয়োজিত ‘উদ্ভাবন উৎসব ও বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা ২০১৭’র সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নারীদের আত্মকর্মসংস্থানে উৎসাহী করে তুলতে কুমারখালীতে নারীদের জন্য মার্কেট নির্মাণের উদ্ভাবনীর উদ্যোগ গ্রহণ করার ফলে তাকে এই সম্মাননা জানানো হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নির্বাচিত হয়েছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহেলা আক্তারের হাতে সম্মননাপত্র ও ক্রেস্ট তুলে দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ। এছাড়াও খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ট জেলা টিম হিসেবে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়াও ১৩টি ক্যাটাগরীতে পুরস্কার বয়ে আনতে সক্ষম অর্জন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল ও শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও অন্যান্য উপজেলার মতো কুমারখালীর নারীজনগোষ্ঠী কিছুটা পিছিয়ে ছিলো। এ কারণে মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রীদের ঝরেপড়ার হার এবং বাল্যবিয়ের প্রবণতাও প্রবল। এমতাবস্থায় নারীদের আত্মকর্মসংস্থানে উৎসাহিত করতে নারীবান্ধব মার্কেটের চিন্তা করেন ইউএনও সাহেলা আক্তার। উপজেলায় প্রাথমিকভাবে ৮টি দোকান ঘর ও ওয়াশব্লুকসহ একতলা বিশিষ্ট নারীবান্ধব মার্কেট নির্মাণের জন্য ১০ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। আগামী দুই মাসের মধ্যে সেই নারীবান্ধব মার্কেট চালু করা হবে। মার্কেটটি চালু হওয়ার ফলে একদিকে যেমন নারীদের সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে, অন্যদিকে অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহেলা আক্তার জানান, নারীরা নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে স্বাধীনভাবে ও স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারে না। তাই নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে নারী মার্কেট একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে। এতে নারীদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে এবং সামাজিক মর্যাদাও বৃদ্ধি পাবে। তিনি জানান, দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিতকরণ শীর্ষক ইনোভেশন প্রকল্পের আওতায় ৭০ জন নারীকে সেলাই, বেকারি, বিউটিফিকেশন ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও নারী উন্নয়ন ফোরাম ও উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে ৭৫ জন নারীকে বিউটিফিকেশন, সেলাই ও গবাদি পশু পালন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। নারী মার্কেটে এসব প্রশিক্ষিত নারীর মধ্যে থেকে যোগ্য ও আগ্রহী নারীদের দোকান বরাদ্দ প্রদানে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এ ছাড়াও কুমারখালী তাঁতশিল্প অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় এখানকার বিপুলসংখ্যক নারী হস্তচালিত ও যন্ত্রচালিত তাঁতে লুঙ্গি, গামছা ও বিছানার চাদর উৎপাদন করে থাকেন। নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে, হস্তশিল্প, বিউটিফিকেশন ও দর্জি দোকান স্থাপনে আগ্রহী নারীদেরও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY