নানা কারণে পাকিস্তান এখন বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোচিত একটি দেশ। এই দেশটির একটি ছোট শহরের নাম দারা আদামখেল। এটি বিশ্বের অন্যতম সর্ববৃহৎ অস্ত্র কালোবাজারের আখড়া। অস্ত্রের দোকানগুলোতে দেখা মেলে শত শত কালাশনিকভ এবং এমপি ফাইভ সাব-মেশিনগানের। সবচেয়ে অবাক করার ব্যাপার হলো, সেখানে আগ্নেয়াস্ত্রের চেয়ে স্মার্টফোনের দাম বেশি। পেশোয়ার থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই শহরের অস্ত্রের ব্যবসা নিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি একটি প্রতিবেদন করেছে। সেটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
পাহাড়বেষ্টিত এই শহরটি দীর্ঘদিন ধরেই সব ধরনের অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের মিলনস্থল। সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আফগানদের যুদ্ধের সময় থেকে মুজাহিদরা এখান থেকেই অস্ত্র কিনত। যেখানে মার্কিন সাব-মেশিনগান এমপি ৫-এর মূল্য কয়েক হাজার ডলার, সেখানে এই শহরে এর দাম মাত্র সাত হাজার পাকিস্তানি রুপি। একইভাবে কালাশনিকভের যে দাম, তার চেয়ে বেশি দাম একটি ভালো মানের স্মার্টফোনের। তবে এ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। সেনাবাহিনীর আক্রমণে কালোবাজারে অস্ত্রের ব্যবসা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।
শহরটির নাম দারা আদামখেল। পাকিস্তানের পেশোয়ার থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে শহরটির অবস্থান। পাহাড়ঘেরা এই শহরটি কয়েক দশক ধরে অপরাধমূলক কার্যকলাপের জন্য বেশ পরিচিত। চোরাকারবারি, মাদক এখানে অতিসাধারণ বিষয়। এখানে ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি থেকে শুরু করে চুরি করা গাড়িও পাওয়া যায়। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের যুদ্ধের সময় মুজাহিদরা অস্ত্র কেনার জন্য সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এখানে আসত।
পরে এ এলাকাটিতে পাকিস্তান তালেবানদের শক্ত অবস্থান তৈরি হয়। এখানে আলাদা বিচারব্যবস্থাও তৈরি হয়। এখানে ২০০৯ সালে পোল্যান্ডের প্রকৌশলী পিওতর স্ট্যানজ্যাকের শিরশ্ছেদ করা হয়। সে সময় থেকেই দারা আদামখেলে সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে থাকে তালেবানরা।